আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হওয়ার কথা পুনর্ব্যক্ত করে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনো কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি বরং আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ভোটেই ক্ষমতায় আসে।

ভোট চুরি আর ভুয়া ভোটার তালিকা করে নির্বাচন করতে পারছে না বলেই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি।স্থানীয় সময় শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা বর্তমান সরকার করেছে বলে দলটির নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করে তাদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা (বিএনপি) সত্যিই চিন্তিত যে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। কারণ, তারা ভোট কারচুপি এবং ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার রাখার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যথায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘যারা জনগণের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসেননি, নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রশ্নে এত গুরুত্ব দেয়ার কী আছে? নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দেবে, ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন এমন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’

নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। তারা জানে যে, সঠিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা হত্যা, অভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে অভ্যস্ত। এটাই বাস্তবতা।’

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ইভিএম একটি আধুনিক পদ্ধতি এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এটি ব্যবহৃত হয়। যেখানে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে দ্রুত নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যায় এবং মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দিতে পারে। ‘এই ইভিএমের বিরুদ্ধে কিছু লোক আছে এটা ঠিক’ – উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগ সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা যাতে দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন, সেজন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে।

জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশন থেকে বাংলাদেশের জন্য কি নিয়ে ফিরছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বন্ধুত্ব। বাংলাদেশের জন্য বন্ধুত্ব নিয়ে ফিরছি এবং বাংলাদেশ যে উন্নয়নের বিস্ময় এটাই বলতে চেষ্টা করে। আর সবচেয়ে বড় কথা হল আমরা শন্তি চাই, যুদ্ধ চাই না। সংঘাত চাই না। এই বার্তাটা অন্তত আমি সকলের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি।’

সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যেসব দেশ ও সরকার প্রধানরা যোগ দিয়েছেন সবাই বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতি বছরের মত এ বছরও নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ।

নিউইয়র্কের এস্টোরিয়া ওয়ার্ল্ড ম্যানরে অনুষ্ঠিত এই সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল নেতাকর্মী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আরেকটি অংশ কুইন্সের উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে আরেকটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।